আমতলী প্রতিনিধি ॥ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আমতলী উপজেলায় ৪৫ হাজার শ্রমজীবি মানুষ কর্মহীন হয়ে পরেছে। এতে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দ্রুত সরকারীভাবে এদের সাহায্যের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। জানাগেছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষনা করে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার ঘোষিত লকডাউনের ১৩ দিন চলছে। সরকারে নির্দেশিত লকডাউন মানতে গিয়ে উপজেলার হতদরিদ্র, দরিদ্র ,রিক্স্রাচালক, ভ্যানচালক, মোটর সাইকেল চালক, দিনমজুরসহ শ্রমজীবি ৪৫ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পরেছেন। কর্মহীন হয়ে পরায় তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ২০১১ সালের আদম শুমারী অনুসারে আমতলী উপজেলায় ২৫.০৭ % মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে বলে জানান উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম। ওই হিসেবে উপজেলায় ৪৫ হাজার হতদরিদ্র শ্রমজীবি মানুষ রয়েছে। তারা দিনে আনে দিনে খায়। কাজ না জুটলে তাদের খাবার জুটে না। লকডাউনের কারণে এ সকল মানুষ কর্মহীন হয়ে পরেছে। দ্রুত এ সকল শ্রমজীবি অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। রোববার আমতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ প্রশাসন কঠোর ভাবেই লকডাউন পালনে কাজ করছে। সড়কে চলতে দিচ্ছে না তেমন যানবাহন। তারপর প্রশাসনের নজর এগিয়ে পরিবার পরিজনের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেয়ার জন্য অটোরিকসা ও ইজিবাইক চলাচল করছে। কিন্তু সড়কে কোন বড় ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না। শ্রমজীবি জাহাঙ্গির আলম, শামিম ও পারভেজ বলেন, লকডাউনের পর থেকে কোন কাম কাজ নাই। পোলাপান লইয়্যা খুব কষ্টে হরি। ঘরে য্যা ছিল হ্যা খাওয়া শ্যাষ। এ্যাহন গুড়াগাড়া লইয়্যা কি খামু হেইয়্যা কইতে পারি না। অটোচালক বাবুল বলেন, কোন মতে ফ্যান পানি খাইয়্যা গুড়াগাড়া লইয়্যা বাইচ্চা আছি। কাউনিয়া গ্রামের শ্রমজীবি কামাল বলেন, কোন কাজ নেই। লকডাউনে বাড়ীতে বসে অলস সময় কাটাচ্ছি। কিন্তু পেটতো অলস না। সেতো যথা সময়ে খাবার চায়। কি হরবো ভেবে পাচ্ছি না। আমতলী বে-সরকারী সংস্থা নজরুল স্মৃতি সংসদের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট মোঃ শাহাবুদ্দিন পান্না বলেন, লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষগুলোকে সরকারী, বে-সরকারী ও বিত্তবানদের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে লকডাউনে কর্মহীন মানুষের কাজের জন্য নির্ধারিত সময় দেয়া প্রয়োজন। যাতে তারা উপার্জন করে পরিবার পরিজনের ভরণ পোষণ চালাতে পারে। নইলে কর্মহীন মানুষগুলো অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করতে হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, উপজেলার শ্রমজীবি ও অসহায় মানুষকে সহায়তায় বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। সহায়তায় বরাদ্দ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, এখনো বরাদ্দ পাইনি।
Leave a Reply